ক্লিপ অন মিটার কাকে বলে | ক্লিপ অন মিটার এর দাম ২০২৪

ক্লিপ অন মিটারের নাম যারা ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক্স এর কাজ করি সকলেরই জানা। কারেন্ট, ভোল্টেজ ও রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ করার জন্য দরকার একটি পরিমাপক যন্ত্র। সচরাচর পরিমাপক যন্ত্র হিসাবে এ্যাভোমিটার বা মাল্টিমিটার ব্যবহার করে থাকি। মাল্টিমিটার দিয়ে কারেন্ট বা ভোল্টেজ পরিমাপ করতে তারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পরিমাপ করতে হয়।

কিন্তু সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে পরিমাপ করতে সাবধানে কাজ করতে হয় যাতে করে বৈদ্যুতিক শক থেকে আমরা মুক্ত হতে পারি। আজকে আমি আপনাদের ক্লিপ অন মিটার সম্পর্কে ধারনা দিব যার সাহায্যে কোন প্রকার ভয়ভীতি ছাড়া আমরা কারেন্ট ও ভোল্টেজের মান বের করতে পারি। পুরো পোস্ট পড়লে ক্লিপ অন মিটার সম্পর্কে সকল ধারনা ক্লিয়ার হয়ে যাবে।

ক্লিপ অন মিটার কাকে বলে

যে যন্ত্রের সাহায্যে বৈদ্যুতিক সার্কিটের যে কোন তারে বা ক্যাবলের মাঝে ক্লাম্প করে তারে প্রবাহিত কারেন্ট প্রবাহের মান জানা যায় তাকে ক্লিপ অন মিটার বলে। ক্লিপ অন মিটারের সাহায্যে সার্কিটে প্রবাহিত কারেন্ট, ভোল্টেজ ও রেজিস্ট্যান্সের মান জানা যায়। ক্লিপ অন মিটারকে অনেকে ক্লাম্প মিটার নামেও চিনে থাকে।
ক্লিপ অন মিটার কাকে বলে
ক্লিপ অন মিটারের সাহায্যে যে কোন তারে যেখানে বিদ্যুৎ প্রবাহ হচ্ছে এমন তারে ক্লিপ আটকিয়ে উক্ত তারে প্রবাহিত কারেন্ট প্রবাহের মাত্রা সম্পর্কে ধারনা পাওয়া যায়। শুধু মান নির্ণয়ে নয় ক্লিপ অন মিটার সার্কিটের বিভিন্ন ত্রুটি সনাক্তের কাজেও ব্যবহার করা হয়।
বাজারে দুই ধরনের ক্লিপ অন মিটার পাওয়া যায় একটি লোড কারেন্ট পরিমাপের জন্য ব্যবহার করা হয় অন্যটি সার্কিটে প্রবাহিত লিকেজ কারেন্ট পরিমাপের জন্য ব্যবহার করা হয়ে থাকে। তবে বর্তমানে কিছু ক্লিপ অন মিটার রয়েছে যা একত্রে লোড কারেন্ট ও লিকেজ কারেন্ট পরিমাপ করতে পারে।

এছাড়াও বর্তমানে এসি ও ডিসি কারেন্ট, ভোল্টেজ পরিমাপ করার জন্য একই ক্লিপ অন মিটার তৈরি করা হয়েছে। যার সাহায্যে অল্টারনেটিং কারেন্ট ও ডাইরেক্ট কারেন্ট উভয় পরিমাপ করা যায়।

ক্লিপ অন মিটারে ব্যবহৃত ফাংশন সমূহ

অনেকে ক্লিপ অন মিটারের কাজ কিভাবে করতে হয় তা জানে না। তাই ক্লিপ অন মিটারে ব্যবহৃত প্রয়োজনীয় পয়েন্টার বা নবগুলো সম্পর্কে বর্ননা করা উচিত -

পাওয়ার বাটনঃ যার সাহায্যে ক্লিপ অন মিটারকে সচল করতে হবে তাকে পাওয়ার বাটন বলে। পাওয়ার বাটনকে অনেকে পাওয়ার সুইচও বলে থাকে। ক্লিপ অন মিটারের পাওয়ার বাটন অন না করা পর্যন্ত কোন পাঠ সংগ্রহ করা যাবে না। তাই প্রথম কাজ হয় পাওয়ার সুইচ অন করা।

সিলেক্টর নবঃ আমরা ক্লিপ অন মিটার দিয়ে ভোল্টেজ পরিমাপ করবো নাকি কারেন্ট তা আমাদের সিলেক্টর নবের মাধ্যমে চিহ্নিত করে দিতে হবে। আবার এসি ভোল্টেজ পরিমাপ করবো নাকি ডিসি ভোল্টেজ পরিমাপ করবো তাও সিলেক্টর নবের মাধ্যমে সিলেক্ট করা হয়ে থাকে।

ডাটা হোল্ড করে রাখার ব্যবস্থাঃ মাঝে মাঝে এমন হয় পরিমাপ কৃত রাশি সংরক্ষনের প্রয়োজন হয়। ধরুন আপনি খুব অন্ধকারে অথবা চিপা যায়গায় বিদ্যুৎ পরিমাপ করে সেটা ভালো করে বুঝতে পারতেছেন না, তখন হোল্ড বাটন চাপ দিয়ে বাইরে এসে আমরা ক্লিপ অন মিটারে আমাদের পরিমাপকৃত রাশি পরিমাপ করতে পারি।

পরিমাপকৃত রাশি হিসাবে কারেন্ট, ভোল্টেজ ও রেজিস্ট্যান্সের মান মিটার বিচ্ছিন্ন অবস্থায় দেখা যায় যতক্ষন না পর্যন্ত পাওয়ার অফ করা হয়।

ক্লিপ অন মিটারের ব্যবহার

ক্লিপ অন মিটার কোথায় কিভাবে ব্যবহার করতে হয় তা আমাদের অনেকের অজানা। আজকে জানতে পারবেন ক্লিপ অন মিটার কোথায় কোথায় ব্যবহার করা হয়-
  • এসি কারেন্ট পরিমাপ করতে ক্লিপ অন মিটার ব্যবহার করা হয়।
  • ক্লিপ অন মিটার এসি ভোল্টেজ পরিমাপ করতে ব্যবহার করা হয়।
  • কোন সার্কিটের রেজিস্ট্যান্স পরিমাপ করতেও ক্লিপ অন মিটার ব্যবহার করা হয়।
  • ওপেন সার্কিট,আর্থ ফল্ট ও শর্ট সার্কিট জনিত ত্রুটি নির্ণয়ে ক্লিপ অন মিটার ব্যবহার করা হয়।
  • কন্টিনিউটি টেস্ট করতে ক্লিপ অন মিটার ব্যবহার করা হয়।
তবে বর্তমানে নতুন কিছু ক্লিপ অন মিটার তৈরি করা হয়েছে যার সাহায্যে ডিসি ভোল্টেজ, ডিসি কারেন্ট পরিমাপ করা যায়।

ক্লিপ অন মিটার কিভাবে কাজ করে

ক্লিপ অন মিটার এর কার্যপ্রনালী অনেক সহজ। ক্লিপ অন মিটারের উপরে যে ক্লিপ আছে তা যে কোন তারের উপরের ধরার মাধ্যমে উক্ত তার দিয়ে কি পরিমান কারেন্ট, ভোল্টেজ ও রেজিস্ট্যান্স আছে তা সরাসরি দেখতে পারি ডিজিটাল ডিসপ্লে এর মাধ্যমে। নিচে ক্লিপ অন মিটার কিভাবে কাজ করে তা তুলে ধরার চেষ্টা করছি-
  • প্রথমে মিটার এর পাওয়ার বাটন অন করতে হবে। পাওয়ার বাটন অন করলে ডিসপ্লেতে লেখা উঠবে তখন বুঝা যাবে ক্লিপ অন মিটার কাজ করতে প্রস্তুত।
  • তারপর আমরা বিদ্যুতের কোন রাশি পরিমাপ করতে চাই সিলেক্টর নব দিয়ে সেখানে সিলেক্ট করে দিতে হবে।
  • যদি এসি বিদ্যুৎ হয় তাহলে এসি ভোল্টেজের বাটনে পয়েন্টার সিলেক্ট করে দিয়ে উক্ত বর্তনীতে প্রবাহিত ভোল্টেজ পরিমাপ করতে হবে। আর যদি ডিসি ভোল্টেজ পরিমাপ করি তাহলে ডিসি পয়েস্টারে সিলেক্ট করতে হবে।
  • কারেন্ট পরিমাপ করতে কারেন্ট এর সিলেক্টর নবে পয়েন্ট রেখে তারের উপরে ক্লিপ দিয়ে ক্লাম্প করার মাধ্যমে আমরা কারেন্ট কত আছে সার্কিটে তা পরিমাপ করতে পারি।
এভাবে আমরা যা পরিমাপ করতে চাই সেটাই পরিমাপ করতে পারি। যদি ক্লিপ অন মিটারের সাহায্যে বিভিন্ন ত্রুটি এবং সার্কিটের কন্টিনিউটি টেস্ট করতে চাই তাহলে ক্লিপ অন মিটারের নিচে দুটি পয়েন্ট আছে। সেখানে প্রোব লাগিয়ে আমরা যে কোন সার্কিট এর আর্থ ফল্ট, ওপেন সার্কিট ত্রুটি ও শর্ট সার্কিট ত্রুটি নির্ণয় করতে পারি।

ক্লিপ অন মিটার এর দাম ২০২৪

ক্লিপ অন মিটার এর দাম অনেকে জানতে চান, কারন এ মিটারটির ব্যবহার খুবই চমৎকার। আপনারা বাজারে ৬৫০ টাকা থেকে শুরু করে ১০০০ টাকার ভিতর ভালো মানের ডিজিটাল ক্লিপ অন মিটার কিনে নিতে পারবেন। ক্লিপ অন মিটার এর দামের বিষয়টা নির্ভর করে প্রস্তুতকারন কোম্পানির উপর। ভালো কোম্পানির দাম একটু বেশি হয়। তবে কেনার আগে অবশ্যই অনলাইনে দাম যাচাই করে কিনবেন।

ক্লিপ অন মিটার কিভাবে ব্যবহার করতে হয়

ক্লিপ অন মিটার কিভাবে ব্যবহার করতে হয়

শেষকথাঃ

আমরা এতক্ষন ধরে ক্লিপ অন মিটার কি? ক্লিপ অন মিটার কিভাবে কাজ করে এবং ক্লিপ অন মিটার এর দাম কত সবকিছু বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করলাম। আশা করি পুরো পোস্ট পড়ে আপনাদের অনেক ভালো লেগেছে।

ক্লিপ অন মিটার সম্পর্কে কারো যদি কিছু জানার থাকে আমাদের কমেন্ট করে জানিয়ে দিতে পারেন। এমন নিত্যনতুন পোস্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করার অনুরোধ করছি।- ধন্যবাদ।

আরো পড়ুনঃ

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

উপায় কী এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url