হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহারের নিয়ম | হেয়ার ড্রায়ার এর ক্ষতিকর দিক সমূহ

প্রিয় বন্ধুরা, চুল শুকানোর জন্য আমরা অনেকেই হেয়ার ড্রায়ার বা চুল শুকানোর মেশিন ব্যবহার করতে চাই, কিন্তু আমরা হেয়ার  ড্রায়ার ব্যবহারের সঠিক নিয়ম আমরা জানি না। আবার সকল জিনিসের উপকারি দিকের সাথে ক্ষতিকর দিকও আছে, হেয়ার ড্রায়ার এর ক্ষতিকর দিক সমূহ আমাদের জানা দরকার। আপনারা যারা হেয়ার ড্রায়ার সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাচ্ছেন আজকের পোস্টটি তাদের জন্য।

পুরো পোস্ট পড়লে আপনার আরো জানতে পারবেন. হেয়ার ড্রায়ার কাকে বলে, হেয়ার ড্রায়ার কি আসলেই ব্যবহার করা উচিত কিনা, হেয়ার ড্রায়ার চুলের জন্য কতটা ক্ষতিকর, হেয়ার ড্রায়ার প্রাইস ইন বাংলাদেশ বা হেয়ার ড্রায়ারের দাম। পুরো পোস্টটি আপনাদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ন তাই মন দিয়ে পুরো পোস্ট পড়ুন।

আরো পড়ুনঃ বৈদ্যুতিক ভ্যাকুয়াম ক্লিনার কিভাবে কাজ করে। 

হেয়ার ড্রায়ার কাকে বলে?

যে বৈদ্যুতিক যন্ত্র ব্যবহার করে চুল শুকানো বা হেয়ার ড্রাই করা হয় তাকে হেয়ার ড্রায়ার বলে। হেয়ার ড্রায়ার মেশিনে মোটর হিসাবে ইউনিভার্সাল মোটর ব্যবহার করা হয়। হিট উৎপন্ন করার জন্য হেয়ার ড্রায়ারে একটি হিটিং এলিমেন্ট বসানো থাকে। মোটরের শ্যাফটের সাথে একটি ফ্যান সংযোগ করা থাকে, যার সাহায্যে বাতাস বাহিরের দিকে প্রবাহিত হয়।

যখন চুল শুকানোর জন্য হেয়ার ড্রায়ারের সুইচ অন করা হয় তখন মোটর চালু হয় এবং একই সাথে হিটিং এলিমেন্টও গরম হয়। শ্যাফটের সাথে যে ফ্যানটি থাকে তখন গরম বাতাসকে বাহিরে প্রবাহিত করে চুলে ধরলে চুল শুকিয়ে যায়। হেয়ার ড্রায়ার এর বৈদ্যুতিক ক্ষমতা সাধারণত ৬০ ওয়াট হয়ে থাকে। মোটরের সাথে হিটার সিরিজ বা প্যারালালে সংযুক্ত করা থাকে।

হেয়ার ড্রায়ারের বিভিন্ন অংশগুলো উল্লেখ করা হলো- (১) ইউনিভার্সাল মোটর, (২) হিটিং এলিমেন্ট, (৩) হিটার সুইচ, (৪) মোটর সুইচ, (৫) জাল বা নেট, (৬) প্লাস্টিকের বডি, (৭) পাখা বা ব্লেড, (৮) লাইন কর্ড ইত্যাদি।

হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহারের নিয়ম

হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহারের নিয়ম

আমাদের ব্যস্থ জীবনে কাজের তাগিদে অনেক সময় হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহারের দরকার পড়ে। কিন্তু আমরা কিভাবে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করবো এর সঠিক নিয়ম জানি না। তাই অনেক সময় অনেকের চুল পড়ে যায়,  চুল ফেটে যায়, চুলের গঠন নষ্ট হয়ে যায়। সঠিক নিয়ম মেনে হেয়ার ড্রায়ার  ব্যবহার না করার ফলেই মূলত এ সমস্যা গুলো হয়ে থাকে। নিচে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহারের কিছু নিয়ম তুলে ধরছি -
  • হেয়ার ড্রায়ারে যেহেতু ঠান্ডা ও গরম দু-রকম বাতাস পাওয়া যায় সেক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন ঠান্ডা বাতাস ব্যবহার করে চুল শুকানোর। এটা গরম বাতাসের চেয়ে কম ক্ষতি করে চুলের।
  • চুল শুকানোর পূর্বে অবশ্যই ভালো ভাবে তাওয়াল দিয়ে চুলগুলো মুছে নিতে হবে।
  • হেয়ার ড্রায়ারের তাপমাত্রা মিডিয়াম রেখে চুল শুকানো উত্তম। 
  • চুলে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহারের পুর্বে তাপমাত্রা নির্ধারন করে নিতে হবে, অতিরিক্ত হিট হলে চুল পুড়ে যাওয়ার সম্ভবনা থাকতে পারে।
  • হেয়ার ড্রায়ারকে নির্ধারিত দূরুত্বে রেখে চুলে বাতাস দেওয়া। লক্ষ রাখতে হবে হেয়ার ড্রায়ার কোনভাবেই যেন চুলের কাছাকাছি চলে না আসে এতে করে চুলের ক্ষতি হতে পারে। মিনিমাম ১৫ থেকে ২০ সে.মি দূরুত্ব বজায় রাখার চেষ্টা করুন।
  • একেবারে ভেজা অবস্থায় চুল শুকাতে যাবেন না, চুলগুলো ভালোভাবে মুছে নিতে হবে। চুলগুলো শুকানোর জন্য ২০% ভিজা চুলে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করা উত্তম।
  • রেগুলার যাদের হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহারের দরকার পড়ে তারা অবশ্যই নির্ধারিত নিয়ম করে করে চুলে তেল ব্যবহার করবেন, না হলে চুলের সমস্যা হতে পারে।
  • চুলের যত্নে হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহারের ক্ষেত্রে অবশ্যই হেয়ার সিরাম বা হিট প্রোটেকশন ব্যবহার করা উত্তম।
  • এক হাত দিয়ে হেয়ার ড্রায়ার, অন্য হাতে চিরুনি নিয়ে চুলগুলো সোজা করে ধরলে তাড়াতাড়ি চুল শুকিয়ে যায়।

হেয়ার ড্রায়ার এর ক্ষতিকর দিক সমূহ

হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহার করে সহজে চুল শুকিয়ে নিয়ে আমরা বাহিরে কাজে যেতে পারি, এতে যেমন আমাদের উপকার হয় আবার অতিরিক্ত ব্যবহারে চুলের অনেক ক্ষতিও হয়ে থাকে। হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহারে চুলের যে সকল কমন ক্ষতি হয়, সেগুলো হলো- ময়েশ্চারাইজার শুষে নেয়, এতে চুল রুক্ষ হয়ে যায়। চুলের আগা ফেটে যায় চুলে ময়েশ্চার কম থাকার কারনে।

অতিরিক্ত হেয়ার ড্রায়ার ব্যবহারের ফলে চুলের রং পরিবর্ত হতে পারে। হেয়ার ড্রায়ার অতিরিক্ত ব্যবহারে আপনার চুল লাল কালারের হয়ে যেতে পারে। হেয়ার ড্রায়ার যেহেতু চুল থেকে জলীয় অংশ দূর করে দেয় এটা আমরা সকলে বুঝি। তাই যাদের চুল রুক্ষ তারা গুসল শেষে হেয়ার ড্রায়ার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন। 

হেয়ার ড্রায়ারের সম্ভাব্য ত্রুটি ও প্রতিকার

হেয়ার ড্রায়ার যেহেতু যান্ত্রিক ও বৈদ্যুতিক দুটি আলাদা অংশ নিয়ে গঠিত তাই সমস্যা ‍দুটি আলাদা অংশের জন্য হতে পারে। হেয়ার ড্রায়ারে সচরাচর নিম্নের ত্রুটিগুলো হয়ে থাকে-
  • সুইচ অন করলে ফিউজ পুড়ে যায়। এমন সমস্যার প্রতিকার হিসাবে সাপ্লাই কর্ড ও হিটিং এলিমেন্টের কয়েল পরীক্ষা করতে হবে।
  • সুইচ অন করার পরেও হেয়ার ড্রায়ার হিট না হওয়া। এমন সমস্যা হিটিং এলিমেন্ট নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারনে হতে পারে। তাই হিটিং এলিমেন্ট বদলানোর মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধান মিলবে।
  • সুইচ অন করলে বাহিরে বাতাস প্রবাহিত হয় না। এর প্রতিকার হিসাবে মোটর জ্যাম হয়ে আছে কিনা সেটা পরীক্ষা করে দেখতে হবে।
  • সুইচ অন করলে গোঁ গোঁ শব্দ করে। এরুপ সমস্যা মূলত ফ্যানের সংযোগ লুজ হলে হয়ে থাকে।

হেয়ার ড্রায়ার প্রাইস ইন বাংলাদেশ 

Best Hair Dryer price in Bangladesh লিখে যারা সার্স করি তাদের উদ্দেশ্যে বলে রাখি, হেয়ার ড্রায়ারের দাম নির্ভর করে ব্যবহৃত ফিচারের উপর ভিত্তি করে। আবার কোম্পানি ভেদেও হেয়ার ড্রায়ারের দাম কম বেশি হয়ে থাকে। বর্তমানে ওয়ালটন হেয়ার ড্রায়ার (Walton Hair Dryer), ফিলিপস হেয়ার ড্রায়ার (Philips Hair Dryer), ভিশন হেয়ার ড্রায়ার (Vision Hair Dryer) ছাড়াও আরো বহু কোম্পানির হেয়ার ড্রায়ার পাওয়া যায় বাজারে। ৭০০ টাকা থেকে শুরু করে ২০০০ টাকার ভিতরে পছন্দ করে আপনারা হেয়ার ড্রায়ার গুলো কিনতে পারেন।

আপনারা নিকটস্ত কোন শোরুমে গিয়ে হেয়ার ড্রায়ার কিনতে পারেন অথবা অনলাইনে হেয়ার ড্রায়ার লিখে সার্স করলে অনেক মডেলের হেয়ার ড্রায়ার চলে আসবে সেখান থেকে পছন্দ করে হেয়ার ড্রায়ার কিনতে পারেন।

শেষকথা

পুরো পোস্টজুড়ে হেয়ার ড্রায়ারের বিস্তারিত সকল কিছু তুলে ধরার চেষ্টা করলাম। আপনারা যদি পোস্টটি পড়ে উপকৃত হন তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন। হেয়ার ড্রায়ার নিয়ে আপনার কোন প্রশ্ন থাকলে অবশ্যই সেটা জানাতে ভুলবেন না। এমন নিত্যনতুন জরুরি পোস্টগুলো পেতে অবশ্যই আমাদের ওয়েবসাইট নিয়মিত ভিজিট করুন - ধন্যবাদ।

আপনাদের জন্য আরো কিছু পোস্ট -

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

উপায় কী এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url