বাইকের তেল বাঁচানোর সহজ উপায় | মোটরসাইকেল তেল বাঁচানোর ১০টি উপায়

বাইকের তেল বাঁচানোর সহজ উপায় নিয়ে অনেকেই বর্তমানে সার্স করে থাকেন। কারন বর্তমানে যে পরিমানে অকটেন ও প্রেট্রোল এর দাম বেড়েছে যা বলার বাইরে। অনেকে আবার  মটরসাইকেল রেখে সাইকেল কিনার প্লান করছে। কারন তেলের দামের সাথে মিল রেখে চলাচল করাটা অনেকটাই কষ্টসাধ্য। আমাদের গুগল নিউজ অনুসরন করুন।

জ্বালানী তেলের আকাশছোঁয়া দামে আপনি যদি কিছু নিয়ম মেনে চলেন তাহলে আপনার বাইকের  তেল বাচাঁনো অনেকাংশে সম্ভব হবে।  আজকে আপনাদের সামনে বাইকের তেল বাঁচানোর ১০ টি সহজ উপায় নিয়ে আলোচনা করবো। আপনারা যদি পুরো পোস্ট পড়ে থাকেন তাহলে বাইকের তেল বাচাঁনোর সহজ উপায় সম্পর্কে ভালো একটি ধারনা পাবেন।

বাইকের তেল বাঁচানোর সহজ উপায়

বাইকের তেল বাঁচানোর সহজ উপায় 

আমরা সকলে অবগত আছি বাংলাদেশে হঠাৎ করে তেলের দাম অনেক বেড়ে গেছে। আর এ কারনে যারা বাইক রাইডার আছে তাদের বাইক চালাতে গিয়ে কিছুটা হলেও হিমশিম খেতে হচ্ছে। আর অনেকে তেলের দাম বেশি হওয়ায় জরুরি কারন ছাড়া তেল কেনা থেকেও বিরত থাকছে এবং বাইক চালানো অনেকটা সিমাবদ্ধ করে দিয়েছে। কি কি পদ্ধতি অবলম্বন করে বাইকের তেল বাঁচানো যায় চলুন দেখে আসি-
১। সঠিক গতিতে বাইক চালানোঃ- আমাদের ভিতরে অনেকেই আছেন যারা কিনা খুব দ্রুত গাড়ী চালায়। যত জোরে গাড়ি চালানো হবে আপনার বাইকের তেল তত বেশি খরচ হবে। আবার বেশি আস্তেও গাড়ি চালানো যাবে না। আপনার গাড়ি যদি ১০০ CC এর হয়ে থাকে তাহলে আপনার গাড়ির গতি ৪৫ থেকে ৬০ এর ভিতরে রাখুন। আর আপনার গাড়ি যদি ১৫০ CC হয়ে থাকে তাহলে গাড়ির গতি ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার গতিতে রাখুন। গবেষনায় দেখা গেছে এ স্পীডে গাড়ি চালালে তেল অনেক কম খায় এবং আপনার দুঃর্ঘটনার সম্ভবনাও অনেক কমে যায়। আবার বাইকের স্পীড একেবারে দ্রুত না উঠিয়ে আস্তে আস্তে উঠানোর চেষ্টা করুন, এতে করে তেলের অপচয় অনেক কমে যাবে।

২। টায়ারের হাওয়া নির্দেশনা মত রাখাঃ- অনেকে আছি যারা কিনা নিয়মিত বাইকের হাওয়া চেক করি না। যার ফলে অনেক সময় এমন হয় হাওয়ার পরিমান অনেক কমে যায়। আর যখন হাওয়া কমে যাবে তখন গাড়ি চলতে কষ্ট হবে, গাড়ি সঠিক স্পীডে চলতে গেলে অনেক তেলের অপচয় হবে। তাই মাসে কমপক্ষে ২ দিন করে হলেও বাইকের হাওয়া চেক করা উচিত।

৩। বাইক চালানোর জন্য সঠিক রাস্তা নির্বাচনঃ- বাইক চড়ে আপনি যদি কোথাও যেতে চান তাহলে আপনার রাস্তা নির্বাচনে গুরুত্ব আরোপ করতে হবে। কারন যে সকল রাস্তা ভঙ্গুর হয়ে থাকে সেসব রাস্তায় বাইকের স্পীড বেশি উঠানো যায় না। আর আমরা জানি আমাদের গিয়ার যত কম থাকবে তেল তত বেশি মাত্রায় নষ্ট হবে। আবার যে সকল রাস্তায় গাড়ি বেশি থাকে আপনি সেখানেও বাইক জোরে চালাতে পারবেন না, সেখানেও কিন্তু আপনার তেল খরচ বেশি হবে। তাই বাইক নিয়ে কোথাও যেতে হলে আগে রাস্তার বিষটি মাথায় রাখুন তাহলে বাইকের তেল বাঁচানো অনেক সহজ হবে।

৪। বাইক চালাতে মনোযোগী হতে হবেঃ আপনি যেনতেন ভাবে বাইক চালালে কিন্তু আপনার তেল খরচ বাড়বেই। আপনি বাইক চালাতে যদি কয়েকটি পদক্ষেপ ভালো করে লক্ষ করেন তাহলে আপনার তেল খরচ অনেক কমে যাবে। যেমন- বাইক চালানোর সময় বেশি করে ক্লাস চাপা থেকে বিরত থাকবেন। ঘনঘন ব্রেক করা থেকে বিরত থাকবেন, যেসকল যায়গায় ব্রেক করার দরকার হয় না অহেতুক কারনে ব্রেক করবেন না। লো গিয়ারে বাইক চালানো থেকে বিরত থাকুন। আবার অনেকে আছে যারা কিনা বাইকের যে পায়ের ব্রেক আছে সেখানে পা দিয়ে থাকে, অনেক সময় পা ব্রেকে থাকার ফলে হাল্কা ব্রেক হয়ে যায়, এতেকরে গাড়ি চালানোতে ইঞ্জিনের কষ্ট বেশি হয়। এ সকল বিষয় যদি আপনি বাইক চালানোর সময় ভালো করে অনুসরন করেন আপনার বাইকের তেল অনেকটা বেঁচে যাবে।


৫। বাইক চালাতে যাত্রীর সংখ্যা নির্বাচনঃ বাইক চালাতে গেলে এটা সবসময় মাথায় রাখবেন আপনার বাইকের লোড যত কম হবে আপনার বাইকের তেল তত বেশি কম খাবে। আমরা বেশিরভাগ লোক যারা কিনা বাইক সিঙ্গেল ভাবে ড্রাইভ করে থাকি। খুব জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ২ জনের বেশি লোক নিয়ে চলাচল করবেন না। যত লোক সংখ্যা বাড়বে আপনার গাড়ির লোড অনুযায়ী তেলও ঠিক তেমন নষ্ট হবে। তাই বাইকের তেল বাঁচাতে হলে যাত্রীসংখ্যা কম রাখুন।

৬। ভেজালমুক্ত তেলের ব্যবহারঃ যে তেল দিয়ে আমাদের বাইকটি পরিচালিত হয় সেই তেল যদি ভালো না হয় তাহলে কিন্তু আপনার গাড়ির ক্ষতি হয়ে থাকে। আবার তেল খারাপ হওয়ার কারনে আপনার গাড়ি চালানোর সময় তেল বেশি অপচয় হয়ে থাকে। তেল ভেজালযুক্ত হওয়ার কারন হলো আমাদের বেশিরভাগ ফিলিং স্টেশনগুলোতে গাড়ীর সংখ্যা একটাই থাকে যার কারনে একই গাড়িতে ডিজেল, পেট্রোল, অকটেন ইত্যাদি সকল জ্বালানী একটি গাড়িতে আমদানি করে থাকে আর এ কারনে তেলের মান খারাপ হয়ে যায়। তাই সবসময় চেষ্টা করবেন বড় কোন ফিলিং স্টেশন থেকে তেল নেওয়ার কারন তাদের প্রতিটি জ্বালানির জন্য আলাদা আলাদা গাড়ি থাকে।

৭। প্রয়োজন ছাড়া ইঞ্জিন চালু রাখাঃ আমাদের ভিতরে অনেকে আছেন যারা রাস্তাঘাটে দাড়িয়ে অনেকের সাথে গল্প করে বাইক থামিয়ে। তারা কিন্তু বাইকের ইঞ্জিন অফ করে না আর ইঞ্জিন চালু রাখার কারনে বাইকের তেল খরচ বেড়ে যায়। অথবা যারা বড় বড় শহরগুলোতে চলাচল করেন তাদের কিন্তু জ্যামে পড়ে সময় নষ্ট করতে হয়। সেখানে অনেক লোক আছে যারা জ্যামে অকারনে ইঞ্জিন চালু করে রাখে, এতেকরে কিন্তু আপনার জ্বালানির অনেক অপচয় হয়। আপনি যদি মনেকরেন আপনি যে জ্যামে পড়েছেন সেটা ২ থেকে ৩ মিনিটের বেশি হবে তাহলে সাথে সাথে আপনার বাইকের ইঞ্জিন বন্ধ করে দিবেন। এ পদ্ধতি অবলম্বন করেও বাইকের তেল বাঁচানো যায়।

৮। বাইক পার্কিং- এ সাবধানতা অবলম্বন করুনঃ- আমরা কোথাও গেলে আমাদের পছন্দের মোটরসাইকেল কোথায় রাখলাম এ নিয়ে তেমন একটা ভাবি না। আপনারা এটা জানলে অবাক হবেন, বেশি গরমে বাইক রাখলে বাইকের টাংকি গরম হয়ে যায়। আর অতিরিক্ত গরম হওয়ার ফলে ফুয়েলগুলো বাস্প আকারে কমে যায়। বিশেষ করে গরমের দিনে এ ধরনের সমস্য বেশি হয়ে থাকে। তাই সবসময় গাড়ি পার্কিং করতে হলে গাছের ছাঁয়ায় অথবা যেখানে রোদের তাপ নেই এমন যায়গায় গাড়ি পার্কিং করুন।

৯। সার্ভেসিং সেন্টারে নিয়মিত চেকাপঃ আমাদের মানুষের যেমন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা জরুরি ঠিক তেমনি গাড়ির স্বাস্থ্যর দিকেও আমাদের নজর রাখতে হবে। প্রতি মাসে অন্তত দুই বার গাড়ির স্বাস্থ্য চেক করানো উচিত। মাঝে মাঝে বাইকের চেন ঢিলা হয়ে গেল কিনা সেটাও চেক করা জরুরি। গাড়ির যন্ত্রাংশ ভালো থাকলে গাড়ি চালিয়ে মজা পাওয়া যায় আবার তেল সাশ্রয় হয়ে থাকে। প্রতি একহাজার কিলোমিটার চালানোর পর গাড়ির মবিল চেঞ্জ করা দরকার। সঠিক সময়ে মবিল চেঞ্জ না করলে বাইকের সাউন্ড চেঞ্জ হয়ে যায়। বাইক চালনা করতে বেশি শক্তি লাগে এতে করে তেলের ব্যবহার বেড়ে যায়। 

১০। নিয়মিত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করাঃ অনেকে নিজের পছন্দে বাইটিকে অনেক যত্ন করে থাকে। প্রতিদিন একটা নির্ধারিত সময় নিয়ে মুছামুছি করে থাকে। কোথাও কোন ময়লা জমলে সেটাও পরিষ্কার করে থাকে। এয়ার ফিল্টার মাঝে মাঝে বের করে পরিষ্কার করা উচিত। আবার সাপ্তাহে একদিন করে পছন্দের বাইকটি পানি দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে থাকে। এমনকরে সবসময় যত্ন নেওয়ার কারনে বাইটির সবকিছু ভালো থাকে, আর এর কারনে তেল অনেক বেঁচে যায়।

বাইকের তেল বাঁচানোর ৮টি উপায় জানুন ভিডিওতে


আমরা আজকে নিত্যপ্রয়োজনীয় একটি পোস্ট শেয়ার করলাম যেখানে বাইকের তেল বাঁচানোর সহজ কয়েকটি উপায় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। আশাকরি আজকের পোস্টটি বাইক লাভারদের অনেক পছন্দ হবে। আজকের বাইকের তেল বাঁচানোর ১০টি সহজ উপায় যদি আপনার পছন্দ হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাতে ভুলবেন না। আর যদি কোন বিষয়ে বুঝতে অসুবিধা হয় সেটাও আমাদেরকে জানাতে পারেন। 

এমন নিত্যনতুন কনটেন্ট পেতে আমাদের ওয়েবসাইট সবসময় ভিজিট করার অনুরোধ করছি।-আল্লাহ হাফেজ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

উপায় কী এর নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url